bloggermomota.com
https://www.bloggermomota.com/2022/10/blog-post_17.html
সুন্নতে খতনা করার নিয়ম - সুন্নতে খতনার উপকারিতা
সুন্নতে খতনা করার নিয়ম অনুযায়ী সুন্নতে খতনা করতে হয়। আট থেকে দশ বছর বয়সের মধ্যে সুবিধাজনক সময়ে সুন্নতে খতনা করার নিয়ম অনুযায়ী খাতনা করা উচিত। নিচে সুন্নতে খতনা করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হলো।
পেজ সূচিপত্র: সুন্নতে খতনা করার নিয়ম - সুন্নতে খতনার উপকারিতা
সুন্নতে খতনা করার নিয়ম - সুন্নতে খতনার উপকারিতা: উপস্থাপনা
সুন্নতে খতনার হাদিস থেকে জানা যায় যে খাতনা করা ফিতরাতের অন্তর্ভুক্ত। সুন্নতে খতনার ইতিহাস ঘাঁটলে দেখতে পাওয়া যায়, নবী ইব্রাহিম আলাই সাল্লাম সর্বপ্রথম আল্লাহর নির্দেশে সুন্নাতে খাৎনার প্রচলন করেন। আমাদের দেশে সুন্নাতে খাৎনা উপলক্ষে অনুষ্ঠান করা হয়। সুন্নতে খতনা অনুষ্ঠান করার বিধান কি? এবং সুন্নতে খতনার ইতিহাস সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হলো।
সুন্নতে খতনা করার নিয়ম - সুন্নতে খতনার হাদিস
সুন্নতে খতনা করার নিয়ম হলো ১০ বছরের আগেই সন্তানকে সুন্নতে খাতনা করতে হবে। খাতনা করা গুরুত্বপূর্ণ একটি সুন্নত এবং মুসলমানদের বৈশিষ্ট্যের অন্তর্ভুক্ত। এ ব্যাপারে সুন্নতে খতনার হাদিসে বলা হয়েছে, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ফিতরাত (তথা নবীগণের সুন্নত) ৫টি: খতনা করা, নাভীর নিচের পশম পরিষ্কার করা, বগলের পশম উঠানো, মোঁচ ছোট করা এবং নখ কাটা। (সহীহ বুখারী: ৬২৯৭)
সুতরাং উপরে উল্লেখিত হাদীস থেকে বোঝা গেল যে, সন্তান শক্ত-সামর্থ্য বয়সে পৌঁছানোর সাথে সাথেই তার খতনা করাতে হবে। তবে যদি কোন ব্যক্তি প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর কিংবা যে কোনো বয়সে ইসলাম গ্রহণ করে তাহলে তাকে সেই বয়সেই খতনা করাতে হবে। সুন্নতে খতনার ইতিহাস থেকে জানা যায়, নবী ইব্রাহিম আলাই সাল্লাম ৮০ বছর বয়সে নিচের খাতনা নিজেই করেছিলেন।
সুতরাং খতনা করার নির্দিষ্ট কোনো বয়স নেই তবে শিশুদেরকে ৭-৮ বছর বয়সে সুন্নাতে খাৎনা দেওয়া উত্তম। হাদিস থেকে জানা যায় কিছু কিছু ক্ষেত্রে মহিলাদের হয় খৎনা করার নিয়ম রয়েছে।উপরে সুন্নতে খতনা করার নিয়ম তুলে ধরা হয়েছে। পাশাপাশি সুন্নতে খতনার হাদিস উল্লেখ করা হয়েছে। নিচে সুন্নতে খতনার উপকারিতা, সুন্নতে খতনার ইতিহাস, সুন্নতে খতনার ইংরেজি ও সুন্নতে খতনা অনুষ্ঠান সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
সুন্নতে খতনার উপকারিতা
সুন্নতে খতনার উপকারিতা অনেক। আপনি যদি সুন্নতে খাতনা না করেন তাহলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় পড়তে পারেন। তাই অবশ্যই আপনার উচিত হবে সুন্নতে খতনা করে নেয়া। সুন্নতে খতনার উপকারিতা সমূহ কী কী তা নিচে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হবে। সুন্নতে খতনার ইতিহাস এবং সুন্নতে খতনা অনুষ্ঠান করার বিধান কি? সে সম্পর্কে জানতে চাইলে শেষ পর্যন্ত আর্টিকেলটি পড়তে থাকুন
পুরুষাঙ্গের ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। সুন্নতে খতনার উপকারিতা গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি উপকারিতা হলো সুন্নাতে খাৎনা পুরুষাঙ্গের ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। যারা সুন্নত-এ-খাতনা করেনি তাদের মাঝে পুরুষাঙ্গের ক্যান্সার অনেক বেশি পরিমাণে হয়ে থাকে। পক্ষান্তরে যারা সুন্নতে খাতনা করে তাদের পুরুষাঙ্গের ক্যান্সার হয় না বললেই চলে।
পুরুষাঙ্গ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে। খাতনা না করালে পুরুষাঙ্গের উপরিভাগের চামড়ার নিচে এক ধরনের ব্যাকটেরিয়ার জন্ম নেয়, যা বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ এর মূল কারণ। তাই যে কোনো ধরণের যৌন সংক্রমণ থেকে নিরাপদ থাকার জন্য অবশ্যই আপনাকে খাতনা করতে হবে। সুন্নতে খতনার উপকারিতা সমূহের মাঝে অন্যতম আরেকটি উপকারিতা হলো এতে পুরুষাঙ্গ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে।
মূত্রনালীর সংক্রমণের ঝুঁকি হ্রাস করে। সুন্নতে খাৎনার মাধ্যমে মূত্রনালীর বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণের ঝুঁকি কমে যায়। তাই অবশ্যই আপনার উচিত হবে সময়মতো আপনার সন্তানকে সুন্নতে খতনা করার নিয়ম অনুযায়ী খাতনা করে দেয়া। সময়মতো আপনার সন্তানকে সুন্নতে খাতনা করার মাধ্যমে মূত্রনালীর সংক্রমণ এর ঝুঁকি হ্রাস করুন।
যৌন রোগ প্রতিহত করে। সুন্নতে খতনার উপকারিতা সমূহের মধ্যে অন্যতম আরেকটি উপকারিতা হলো খাতনা করার মাধ্যমে যৌন রোগ প্রতিহত করা যায়। ঘটনার মাধ্যমে মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি মেলে। বিশেষ করে যারা খতনা করে তাদের মধ্যে যৌন রোগের সংক্রমণ কম হয়।
যৌন মিলন তৃপ্তিদায়ক করে। সুন্নতে খতনার উপকারিতা গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি উপকারী তা হলো খাতনা করার মাধ্যমে যৌন মিলন অনেক তৃপ্তিদায়ক হয়। খাৎনার মাধ্যমে পুরুষাঙ্গের স্পর্শকাতরতা বৃদ্ধি পায় যার ফলে যৌন মিলনের সময় অনেক আনন্দ উপভোগ করা যায়।
সুন্নতে খতনার ইতিহাস
সুন্নতে খতনার ইতিহাস থেকে জানা যায় সর্বপ্রথম সুন্নাতে খাৎনার প্রচলন করেছিলেন নবী ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম। তিনি ৮০ বছর বয়সে নিজের খাতনা নিজেই করেছিলেন বলে ইতিহাসে বর্ণনা রয়েছে।
সুন্নতে খতনার হাদিস থেকে জানা যায় সর্বপ্রথম সুন্নতে খাতনা করেন হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম। সুন্নতে খতনার হাদিসটি হলো: হজরত সাইদ ইবনে মুসাইয়াব (রহ.) থেকে বর্ণিত, হজরত ইবরাহিম (আ.) হলেন খৎনার সুন্নাত পালনকারী সর্বপ্রথম ব্যক্তি। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হাদিস : ২৬৪৬৭)
সুন্নতে খতনার ইতিহাস কি? তা উপরে বর্ণিত সুন্নতে খতনার হাদিস থেকে আমরা জানতে পারলাম।সুন্নতে খতনা করার নিয়ম সম্পর্কের মধ্যে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। নিচে সুন্নতে সুন্নতে খতনার ইংরেজি কি? এবং সুন্নতে খতনা অনুষ্ঠান করার বিধান কি তা উল্লেখ করা হলো।
সুন্নতে খতনার ইংরেজি
আপনাকে যদি কেউ জিজ্ঞাসা করে সুন্নতে খতনার ইংরেজি কি? আপনি এই প্রশ্নের উত্তরে কি বলবেন।যদি আপনার সুন্নতে খতনার ইংরেজি জানা থাকে তাহলে উত্তর দিতে পারবেন। আর যদি আপনার সুন্নতে খতনার ইংরেজি জানা না থাকে তাহলে কখনই এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবেন না। তাই সুন্নতে খতনার ইংরেজি কি? তা আপনার জেনে রাখা উচিত। সুন্নতে খতনার ইংরেজি কি? তা নিচে তুলে ধরা হলো। সুন্নতে খতনার ইংরেজি হলো circumcision.সুন্নতে খতনা অনুষ্ঠান করার বিধান
বর্তমান সমাজে একটি কালচার প্রচলিত রয়েছে তা হলো: সুন্নতে খাৎনার জন্য বিশাল বড় অনুষ্ঠান করা হয় এবং সেই অনুষ্ঠানে অনেক মানুষকে দাওয়াত করা হয়। যারা সেই অনুষ্ঠানে আসে তারা বিভিন্ন ধরনের উপহার সামগ্রী নিয়ে আসে। এবং অনেক সময় দেখা যায় এই অনুষ্ঠানগুলোতে ডিজে পার্টির অনুষ্ঠান করা হয়। গান-বাজনা থেকে শুরু করে ছেলে মেয়ে একসাথে বিভিন্ন ধরনের দুষ্টামি নাচানাচি করে। এভাবে সুন্নতে খতনা অনুষ্ঠান করার বিধান নেই।
অশ্লীলতা রয়েছে এমন কোন ধরনের অনুষ্ঠান ইসলামে বৈধ নয়। তাই সুন্নতে খাৎনা অনুষ্ঠান উপলক্ষে এ ধরনের অস্থিরতা অবশ্যই পরিত্যাজ্য। আর এই অনুষ্ঠানগুলোতে সাধারণত পর্দা মেইনটেইন করা হয় না। যে অনুষ্ঠানে পর্দা নেই সেই অনুষ্ঠানের কোনো মুসলিম যেতে পারেন। অবশ্যই এই ধরনের অনুষ্ঠান পরিহার করতে হবে।
তবে আপনি কিছু মানুষকে খাওয়াতে চান তাহলে তো দোষের কিছু নয়। আপনি চাইলে অবশ্যই আপনার আত্মীয়-স্বজনসহ প্রতিবেশীদের কে দাওয়াত করে খাওয়াতে পারেন। সেক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে মনে রাখতে হবে যে আপনি তাদের থেকে কোন ধরনের উপহার সামগ্রী গ্রহণ করবেন না।
তবে যদি কেউ স্বেচ্ছায় কোন কিছু হাদিয়া দেয় তাহলে তা গ্রহণ করা যেতে পারে। সুতরাং সুন্নতে খতনা অনুষ্ঠান করার বিধান হলো শালীনতার সহিত ভোজের অনুষ্ঠান করা। সুন্নতে খতনা অনুষ্ঠান করার বিধান কি? আশা করি তা জানতে পেরেছেন পেরেছেন।
সুন্নতে খতনা করার নিয়ম - সুন্নতে খতনার হাদিস: উপসংহার
সুন্নতে খতনার উপকারিতা, সুন্নতে খতনার ইতিহাস ও সুন্নতে খতনা অনুষ্ঠান করার বিধান সম্পর্কে ইতোমধ্যেই বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। অবশ্যই আপনার সন্তানকে সময়মতো সুন্নতে খাতনা করাতে হবে। ইসলাম মানবজাতির জন্য যে সকল কাজ করার নির্দেশ প্রদান করেছে তার প্রত্যেকটি কাজই আমাদের জন্য কল্যাণকর তাই অবশ্যই আমাদেরকে কুরআন এবং হাদীসের বিধিবিধানগুলো যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে। সুন্নতে খাতনা সম্পর্কিত এই আর্টিকেলটি আপনার ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই শেয়ার করতে ভুলবেন না। ১৬৪১৩
0 Comments
দয়া করে নীতিমালা মেনে মন্তব্য করুন